ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাংস এখনো বাড়তি দামে

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ২০-১২-২০২৪ ০৩:৫৮:১১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২০-১২-২০২৪ ০৭:০৪:৩২ অপরাহ্ন
মাংস এখনো বাড়তি দামে সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
 গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে স্থিতিশীল থাকলেও সব মাছের দাম যে ক্রেতার নাগালে সেটি বলা যাবে না। অন্যদিকে, আগের মতো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খাসি, মুরগি ও গরুর মাংস। যা নিয়ে আক্ষেপ করছেন ক্রেতারা। মাছ বিক্রেতারা বলছেন, মাছের দাম আগের মতো স্থিতিশীল। আবার কিছু কিছু মাছের দাম একটু নিম্নমুখী। সেক্ষেত্রে বলা যায়, মাছের বাজারে ক্রেতাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়ার কথা।

ক্রেতারা বলছেন, মাছ-মাংস দীর্ঘদিন ধরেই বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে নতুন করে দাম না বাড়লেও ক্রেতাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ‌মাছ-মাংসের দাম না কমলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের লোকজনের আমিষের চাহিদা পূরণ করা দিনদিন আরো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া যায়।

মাছ বাজারের খুচরা বিক্রির তথ্য অনুযায়ী, প্রতি কেজি পাঙাস ২০০ টাকা, প্রতি কেজি রুই (ওজন অনুযায়ী) ৩০০-৩৬০ টাকা, কাতল ৩৬০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, চিংড়ি (আকার অনুযায়ী) ৭৫০-৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৪০ টাকা, টেংরা প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, কৈ মাছ প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, সরপুঁটি মাছ ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা ও চাপিলা মাছ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছের দাম নিয়ে উত্তর বাড্ডা বাজারের খুচরা বিক্রেতা মোহাম্মদ আব্বাস বলেন, মাছের বাজার বলা চলে আগের মতই রয়েছে। খুব একটা দাম বাড়ছেও না আবার খুব কমছেও না। তবে আকার অনুযায়ী বা ওজন অনুযায়ী কিছু কিছু মাছের দাম কম বেশি আছে। সব মিলিয়ে বলা চলে যে মাছের বাজার ঠিকঠাকই আছে।
মধ্য বাড্ডা কাঁচাবাজারের ক্রেতা দিদারুল হোসেন বলেন, রুই-কাতল-চিংড়ির কথা তো বাদই দিলাম, কিন্তু পাঙাস আর তেলাপিয়ার দামের চিত্রটা দেখলেই বোঝা যাবে আসলে মাছের বাজার কতটুকু আমাদের জন্য। একটি মাছের দামও মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য স্বস্তিদায়ক না। তারপরও কিনতে হচ্ছে, কিছু করার নাই। কারণ মাংসতে তো হাতই দেওয়া যায় না।

অন্যদিকে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। প্রতি পিস কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়। অন্যদিকে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস প্রতি কেজি ১১০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। রামপুরা কাঁচাবাজারে সকালে বাজার করতে আসা ক্রেতা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আজকে কতদিন ধরে প্রতিটি মাংসের দাম বেশি। কি মুরগি কি খাসি, কিংবা গরুর মাংসের দাম। এতদিন হয়ে গেল এই বাড়তি দামের কোনো কমতি নেই। এখন মাসে একদিনও  বাজার করেমাংস খাওয়া খুবই কষ্ট। আবার অনেকে আছেন মাসে একদিনও তার পক্ষে বাজার থেকে মাংস কিনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না । রামপুরা বাজারের গরু ও খাসির মাংসের বিক্রেতা আপেল খান বলেন, আসলে মাংসের দামের কারণে আমাদের বেচা কেন অনেক কম। তারপরও আমরা দাম কমাতে পারছি না। কারণ আমরা খাসি বা গরু কোনোভাবে কম দামে কিনে নিয়ে আসতে পারছি না। ফলে সেই দাম আগের মতই আছে।

এদিকে গত সপ্তাহে বাজারে সব সবজি চড়া দামে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে অনেক সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে দুই-তিন ধরনের সবজির মৌসুম পুরোপুরি শুরু না হওয়ায় সেগুলো প্রতি কেজি ১০০ বা তার বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ মুহূর্তে বাজারে সবচেয়ে কম দামের সবজির মধ্যে রয়েছে মুলা, যা ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে উঠতে শুরু করায় পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৪০ টাকায়। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাজারে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, প্রতি পিস বাঁধাকপি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি নতুন টমেটো বিক্রি হচ্ছে প্রতি ১৪০ টাকায়, মুলা প্রতি কেজি ৩০ টাকায়, লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, গাজর প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, গোল বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, পেঁয়াজ ফুল প্রতি আঁটি ২০ টাকায়, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, শালগম প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকায়, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকায়, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকায়, শিম (বিচিওয়ালা) প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, শিম (সাধারণ) প্রতি কেজি ৫০ টাকায়, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায়, নতুন আলু প্রতি কেজি ৭০ টাকায়, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকায় এবং ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর মালিবাগ বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম কিছুটা কমেছে এটা ঠিক, তবে শীতের এই সময় এসে সবজির দাম সবচেয়ে কম হওয়ার কথা থাকলেও সেভাবে এখনো বাজার কমেনি। গত সপ্তাহে যেগুলো ৭০/৮০ টাকা ছিল আজকের বাজারে সেই সবজিগুলো ৫০-৬০ টাকায় এসেছে। তবে এখনো কিছু কিছু সবজি ১০০ টাকার ঘরে রয়ে গেছে।

সবজির দামের বিষয়ে শান্তিনগর বাজারের বিক্রেতা মাসুদ রানা বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতিটি সবজিতেই ১০-২০ টাকা করে কমেছে। আগামী সপ্তাহে এ দাম আরো কমতে পারে। ‌তবে এখন মৌসুম না হওয়ায় ঢেঁড়স, বরবটি, করলা, পটলের দাম বেশি। আজকের বাজারে সবচেয়ে কম দামে সবজির মধ্যে রয়েছে মুলা, যা প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কেবল নতুন উঠতে শুরু করায় পাকা টমেটোর দাম কিছুটা বেশি যাচ্ছে, যা প্রতি কেজি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আজকের বাজারের সবচেয়ে বেশি দামি সবজি নতুন এই টমেটো।

বাংলা স্কুপ/ প্রতিবেদক/ এনআইএন/
 
 


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ